বাংলা চলচ্চিত্রের সোনালি যুগের কথা প্রায়ই শোনা যায়, তবে ‘পদ্মানদীর মাঝি’ সিনেমার পরিচালক গৌতম ঘোষ সোনালি যুগ সম্পর্কে জানেন না। ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত গৌতম ঘোষ সম্প্রতি পুরোনো বাংলা সিনেমা পুনরায় কলকাতায় মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলার সময় এ মন্তব্য করেছেন।
এ আলোচনা চলাকালে তাকে প্রশ্ন করা হয়, "আপনি কি স্বর্ণযুগ পরবর্তী সময়ের দর্শক?" উত্তরে গৌতম ঘোষ বলেন, “কোনটা স্বর্ণযুগ, আমি জানি না। আমরা সবাই এসব কথা বলে থাকি। স্বর্ণ বা রৌপ্য— এভাবে নির্দিষ্ট সময়কে ভাগ করা ঠিক নয়। সময়ের সাথে অনেক কিছুই পাল্টায়। যে সময় উত্তম-সুচিত্রার রোমান্টিক সিনেমা রিলিজ করেছে, সেই সময়ে বাঙালি ওই রোমান্টিকতাকে গ্রহণ করতে পেরেছিল। এখন সেই সময় নেই। এখনকার রোমান্টিসিজমও শেষ হয়ে গেছে। আমরা এখন অন্য সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি।”
গৌতম ঘোষ আরও বলেন, “কলকাতা একটি নানা শ্রেণির মানুষের শহর। এটি কেবল মধ্যবিত্ত বা নিম্ন মধ্যবিত্তের শহর নয়, এটি ওয়ার্কিং ক্লাসের শহর। একসময় এটি ব্রিটিশদের রাজধানীও ছিল। কিন্তু মানুষ কিভাবে তা উপলব্ধি করছেন, জানি না। তবে একথা বলতে চাই, কলকাতা মননশীল চর্চার ক্ষেত্রে আস্তে আস্তে পিছিয়ে যাচ্ছে। মননশীল কাজের গুরুত্ব কমে আসছে।”
গৌতম ঘোষ আরও ব্যাখ্যা করে বলেন, “আমাদের বাংলা চলচ্চিত্রের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো দেশভাগ। আসলে ভারত কখনোই ভাগ হয়নি, পাঞ্জাব এবং বাংলা ভাগ হয়েছে। এই ভাগাভাগির ফলে আমাদের অনেক কিছু হারিয়ে গেছে। সিনেমা আসলে ‘হোপ’— আশা। পজিটিভ চিন্তা থেকে যদি আমরা নেগেটিভ ভাবনা সরিয়ে সৃজনশীলতার দিকে এগিয়ে যেতে পারি, তাহলে আমরা উজ্জ্বল পথের দিকে এগিয়ে যেতে পারব।”