আজ, ২৩ মার্চ, কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী শাহনাজ রহমতুল্লাহর ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১৯ সালের এই দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ১৯৫৩ সালের ২ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করা শাহনাজ অল্প বয়সে পাকিস্তান রেডিও ও টেলিভিশনে গায়িকা হিসেবে তাঁর ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন।
১৯৬৩ সালে মাত্র ১১ বছর বয়সে চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দেওয়ার মাধ্যমে তাঁর সঙ্গীত জীবনের সূচনা হয়। ১৯৬৪ সালে প্রথম টেলিভিশনে গান গাইবার মাধ্যমে তিনি আরও পরিচিতি পান। তাঁর পাঁচ দশকেরও বেশি সময়ের সঙ্গীত ক্যারিয়ারে তিনি অসংখ্য কালজয়ী গান উপহার দিয়েছেন, বিশেষ করে দেশাত্মবোধক গানে তিনি ছিলেন ব্যাপক প্রশংসিত। তাঁর গাওয়া দেশাত্মবোধক গানগুলো এখনো বাঙালির হৃদয়ে প্রভাবিত করে।
পাকিস্তানে থাকার সময় শাহনাজ রহমতুল্লাহ করাচি টিভি এবং উর্দু সিনেমাতেও গান গেয়েছেন। সত্তর দশকে উর্দু গীত ও গজল গেয়ে সঙ্গীতপ্রেমীদের মুগ্ধ করেছেন।
শাহনাজ রহমতুল্লাহর বাবা এম ফজলুল হক এবং মা আসিয়া হক। তাঁর ভাই আনোয়ার পারভেজ ছিলেন সুরকার ও সংগীত পরিচালক, আরেক ভাই জাফর ইকবাল ছিলেন চলচ্চিত্র অভিনেতা ও গায়ক। ব্যক্তিগত জীবনে ১৯৭৩ সালে আবুল বাশার রহমতুল্লাহর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি, এই দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।
শাহনাজ রহমতুল্লাহর গাওয়া “এক নদী রক্ত পেরিয়ে”, “একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনারগাঁয়” এবং “একতারা তুই দেশের কথা বলরে এবার বল”— এই তিনটি গান বিবিসির জরিপে সর্বকালের সেরা ২০টি বাংলা গানের মধ্যে স্থান পেয়েছে।
সঙ্গীতে তাঁর অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৯২ সালে রাষ্ট্রীয়ভাবে একুশে পদকে ভূষিত হন তিনি। এর আগে, ১৯৯০ সালে ছুটির ফাঁদে চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ নারী কণ্ঠশিল্পী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পান তিনি। এছাড়া, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, বাচসাস পুরস্কারসহ নানা পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন এই কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পী।